মরুর সান্ডা বাংলাদেশে ভাইরাল, বিচরণ শুধু অনলাইনে

by Samir Khan

প্রীতম সরকার: মরুর সান্ডা হটাৎই যেনো পাড়ি জমিয়েছে বাংলাদেশে। তবে তা বাস্তবে নয়, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর বদৌলতে দেশের প্রতিটি মানুষের মুঠোফোনেই সৃষ্টি করেছে তোলপাড়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুক, ইউটিউভ থেকে শুরু করে ইন্সটাগ্ৰাম সব জায়গায় যেনো কফিল (মালিক), কফিলের ছেলে আর সান্ডার আলোরণ।

ফেইসবুক-ইউটিউবে যাদের খুব একটা সময় কাটানো হয় না তাদের সবার মনে একটি প্রশ্ন- এই সান্ডা আসলে কি? অথবা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গুলোতে সান্ডা আর কফিলের ছেলের বিভিন্ন স্ট্যাটাস ট্রোল দেখে নিশ্চয়ই না জানা বহু মানুষের জানতে ইচ্ছে করে সান্ডা আসলেই কি?

সম্প্রতি সময়ে ভাইরাল হওয়া বিভিন্ন ভিডিও গুলোতে দেখা যায় বিভিন্ন বাঙালি প্রবাসী যারা আরব দেশগুলোতে কাজ করেন তারা তাদের মালিকের ছেলে অর্থাৎ কফিলের ছেলের জন্য সান্ডা ধরতে যাচ্ছেন অথবা সান্ডা ধরে এনেছেন। সান্ডা ধরার পর উচ্ছাসিত হয়ে ভিডিও বানাচ্ছেন এবং তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে শেয়ার করছেন।

সান্ডা নিয়ে নেটিজেনদের হাস্যরসক ছবি-

মরুভূমির দেশগুলোতে ধনী আরবরা এই সান্ডা খেতে বেশ ভালোবাসেন। মরুভূমিতে খুব বেশি গরম পরলে অথবা তাপমাত্রা বাড়লে ধনী আরবরা এটি খেয়ে থাকেন। ধনী আরবদের জন্য যারা কাজ করেন তারা এটি শিকার করে থাকেন।

“আমাদের কফিলের ছেলে সান্ডা খেতে চাচ্ছে, আজকে মরুভূমি থেকে সান্ডা ধরা হলো-” এই সব কন্টেন্টই যেন ভাইরাল নেট দুনিয়ায়। সান্ডা মূলত দুই ধরণের হয় থাকে।

প্রবাসী বাংলাদেশি ইউটিউবার আব্দুল মান্নানের সান্ডা নিয়ে ভিডিও দেওয়ার পর থেকেই সান্ডা নিয়ে নতুন করে ট্রেন্ডের জন্ম নিয়েছে।

সান্ডা মূলত টিকটিকির সদৃস একটি প্রাণী, তবে আকারে টিকটিকির চেয়ে বড়‌। অনেকেই মনে করেন এটি গুইসাপ, কিন্তু এটি গুইসাপ নয়, এটি লিজার্ড জাতীয় প্রাণী। এরা মূলত নিরামিষভোজী প্রাণী, মাংসাশী নয়। এদের প্রধান খাদ্য গাছপালা-লতাপাতা। প্রাণীগুলো মূলত আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য এবং দক্ষিণ এশিয়ার শুষ্ক ও আধা-শুষ্ক অঞ্চলে পাওয়া যায়। তাদের শরীর মোটা, মাথা চওড়া এবং লেজ কাঁটাযুক্ত, যা আত্মরক্ষার জন্য ব্যবহৃত হয়।

এছাড়া ইদানিং বাংলাদেশে নেটিজেনদের মধ্যে সান্ডা নিয়ে আলোচনার আরেকটি বিশেষ‌ কারণ সাম্প্রতিক সময়ে তাপমাত্রা বৃদ্ধি অর্থাৎ অতিরিক্ত গরম।

প্রায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে দেখা যায় নেটিজেনরা বলছেন, “যে পরিমাণ গরম পড়েছে এখন শুধু সান্ডা এনে পাশে রাখলেই হলো।” অথবা নিজের ছবি এডিট করে মরুভূমি ও পাশে সান্ডা বসিয়ে উপস্থাপন করছেন। নেটিজেনদের হাস্যরসক সে সব ছবি, ভিডিও শেয়ার অথবা স্ট্যাটাসে সান্ডা যেনো‌ এখন আর মরুতে নয় প্রতিটি মানুষের মুটোফোনে দৌড়াঝাপ করছে।

সান্ডার তেল নিয়ে লেখালেখিও এখন ট্রেন্ডিংয়ে আছে। এই সান্ডার তেল শরীরের জন্য উপকারী, খেলে অনেক রোগ ভালো হয় এমন কুসংস্কার সমাজে রয়েছে, যা মূলত ভিত্তিহীন। অনেকে আবার ট্রোল কিংবা মজা করতেও এমন কথা বলে থাকেন।

মরুভূমির মতো জায়গা গুলোতে সান্ডার তেল উপকারী অসুখ সারিয়ে তোলে এই ধরণের কুসংস্কারের কারণে এই প্রাণী অধিক হারে শিকার করা হয়। যা প্রাণীটির বিলুপ্তি কিংবা পরিবেশে ভারসাম্য রক্ষায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর কল্যাণেই বর্তমানে ব্যাপক আলোচনায় এই সান্ডা। একদিকে যেমন এই প্রাণীটির সম্পর্কে ব্যাপক কৌতুহলের সৃষ্টি হয়েছে অন্যদিকে নেটিজেনদেরও মাতিয়ে রেখেছে আনন্দে।

You may also like

Leave a Comment